কোভিড পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক গতি প্রকৃতি নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের বৈঠকের আয়োজন করেছে নীতি আয়োগ
কোভিড পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক গতি প্রকৃতি নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভারতের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে ৮ই জানুয়ারি বৈঠকের আয়োজন করেছে নীতি আয়োগ।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেই জানিয়েছেন অর্থনীতির পুনরুদ্ধার দ্রুত গতিতে হচ্ছে। আগামী বছর এই বৃদ্ধি আরও ভালো হবে, যার ফলে ভারতের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন দ্রুত হারে হবে। অংশগ্রহণকারীরা প্রথাগত বিভিন্ন সংস্কারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিগত কয়েক বছরের এই সব সংস্কারের ফলে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। অংশগ্রহণকারীরা ভবিষ্যতের সংস্কারের বিষয়গুলি নিয়েও তাঁদের বক্তব্য জানিয়েছেন। আগামী বছরগুলিতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারের ব্যয়ের ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে সুবিধা হবে বলে মত প্রকাশ করে বেশ কিছু অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারের বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদন ক্ষেত্রে শ্রম উৎসাহী উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দিয়ে মোবাইল ফোন তৈরিতে উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহে ভারত কতটা সাফল্য পেয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীরা আর্থিক বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা আর্থিক ক্ষেত্রে সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী তহবিল নিশ্চিত করতে গৃহস্থদের সঞ্চয়ের সাহায্য নেওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে জনসম্পদকে উন্নয়নের চালিকাশক্তি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণকারীদের থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যের প্রশংসা করে বলেছেন জাতীয় নিরাপত্তার এজেন্ডা তৈরি করতে এগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কোভিড-১৯এর ফলে কিভাবে পেশাদারদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। কৃষি, কয়লা ও খনিজ শিল্পের বাণিজ্যিকীকরণ ও শ্রম আইনের ঐতিহাসিক সংস্কার ঘটানো হয়েছে। আত্মনির্ভর ভারত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাঁর রূপরেখা উল্লেখ করে বলেছেন বর্তমানে আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ভারতীয় সংস্থাগুলি যুক্ত হয়েছে। তিনি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ভারতে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আস্থা রাখার কথা উল্লেখ করেছেন। বিশ্বজুড়ে মন্দাভাব সত্ত্বেও এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। জাতীয় স্তরে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভারতে বেশকিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিভাবে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে এবং তার মধ্য দিয়ে আর্থিক বিকাশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। পরিকাঠামোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল ইনফ্রাসট্রাকচার পাইপ লাইনের কথা তুলে ধরেন। একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক বিষয়সুচি গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী অংশীদারিত্বের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী, নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান, পরিকল্পনা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী, নীতি আয়োগের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব ও প্রধান উপদেষ্টা, ক্যাবিনেট সচিব এবং নীতি আয়োগের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। অর্থ দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকরাও বৈঠকে যোগ দেন।
শীর্ষ স্থানীয় যেসব অর্থনীতিবিদরা এই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেনঃ-
অরবিন্দ পানাগড়িয়া, অরবিন্দ বীরমানি, অভয় পেঠে, অশোক লাহিড়ী, অভীক বড়ুয়া, ইলা পট্টলায়ক, কে ভি কামাথ, মনিকা হালেন, রাজীব মন্ত্রী, রাকেশ মোহন, রবীন্দ্র ঢোলাকিয়া, সৌমকান্তি ঘোষ, শঙ্কর আচার্য, সোনাল ভার্মা, সুনীল জৈন।