সরব শুভেন্দু
সোমবার তেখালির সভায় মমতা ঘোষণা করেছেন তিনি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন। তৃণমূল নেত্রীকে তাঁর সরাসরি চ্যালেঞ্জ, ’নন্দীগ্রামে হাফ লাখ ভোটে হারাতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’ সোমবার বিকেলে রাসবিহারিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়কে তুলোধোনা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। বেকারত্ব-সহ রাজ্যবাসীর যাবতীয় সমস্যার জন্য দায়ী করলেন রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বললেন, ‘পঞ্চাশ হাজার ভোটে মাননীয়াকে হারাবই, না হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’ সোমবার টালিগঞ্জ থেকে রাসবিহারি পর্যন্ত মিছিল ছিল বিজেপির। সেখানে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, ভারতী ঘোষ, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী-সহ গেরুয়া শিবিরের প্রথম সারির একাধিক নেতা। মিছিল শেষে রাসবিহারীতে সভা করেন তাঁরা। সেখান থেকে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে চাঁচাছোলা ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, ‘তৃণমূল একটা কোম্পানি। পিসি ভাইপো যে কোনও সভা থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতেই পারে। কিন্তু বিজেপি ওভাবে চলে না। নন্দীগ্রামে বিজেপি যাকেই প্রার্থী করুক মাননীয়াকে নন্দীগ্রামে কম করে ৫০ হাজার ভোটে হারাব। নাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী ও পিকেকে কটাক্ষ করে আরও বলেন, ‘মাননীয়ার এতই বুদ্ধি যে ২৯৪টি আসনের প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন এমন অবস্থা বিহার থেকে এক ঠিকা সংস্থাকে নিয়ে এসে তার থেকে বুদ্ধি ধার করতে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে ঠেকানো যাবে না বিজেপিকে।’ এদিনের বিজেপির মিছিলে হামলা প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশকে তুলোধনা করে শুভেন্দু বলেন, ‘আজকে পারমিশন নিয়ে মিছিল করা হয়েছে। সেখানেও দুষ্কৃতীরা ইটবৃষ্টি করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে। পুলিশ আগে দলদাস ছিল। এখন ভাইপোর কৃতদাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এসব করে কোনও লাভ হবে না। পদ্ম ফুটবেই।’ সবমিলিয়ে এদিন শুভেন্দুর নিশানায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশ। শুভেন্দু এদিন বলেন, ‘মেদিনীপুরে গিয়ে বড় বড় কথা বলে এসেছেন। দিলীপ ঘোষ জঙ্গলমহলের লাল মাটির লোক। আর আমি দিঘার কাছাকাছি বালুমাটির লোক। দু’জনে হাত মিলিয়েছি। ৫ বছর অন্তর ভোটের আগে নন্দীগ্রামের কথা মনে পরে মমতার। কী করেছেন নন্দীগ্রামের মানুষের জন্য ?অষ্টম শ্রেণির বইটা দেখবেন। সিঙ্গুরের ইতিহাস আছে। গণহত্যার মতো ঘটনা নিয়ে একটা শব্দও নেই। ৩০ হাজার লোককে জড়ো করেছিল। হায়দরাবাদের পার্টিটার মতো সভা ছিল। যে পুলিশ অফিসার গুলি চালিয়ে ছিলেন সেই পুলিস অফিসার অরুণ গুপ্তাকে অবসর নেওয়ার পরও ৭ বছরে ৪টে এক্সটেনশন দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোকুলনগরে গুলি চালিয়েছিলেন সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লোককে তৃণমূলের মহাসচিব তৃণমূল কোম্পানির ভবনে দলে জয়েন করিয়েছেন। আপনাকে নন্দীগ্রামের মানুষ ক্ষমা করবে না।’
নন্দীগ্রামে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরে বললেন, ‘সেফ সিট খুঁজতে নন্দীগ্রামে দাঁড়াচ্ছেন। আমাদের কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার দরকার নেই। জেনে রাখুন, ২৩ মে নবান্নে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীই বসবেন।’ এরপর আরও হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘লোকে আমাকে দুর্মুখ বলেন। শুধু মুখ কেন, প্রয়োজনে আমি হাতও চালাতে পারি।’